WBCS প্রিলিমিনারি ২০২৩; শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি

WBCS প্রিলিমিনারি ২০২৩; কিছু জরুরী কথা    

বলা যায় WBCS প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হল নতুন জীবনের প্রবেশপথ। যারা এই পরীক্ষার তোরণ পার করে প্রবেশ করতে পারবে তারাই পারবে মেইন পরীক্ষায় বসতে। তারপর চূড়ান্ত পর্যায়ের ইন্টারভিউ অনেক দীর্ঘ যাত্রাপথ! সেই যাত্রাপথ কিন্তু দুর্গম হলেও দুঃসাধ্য নয়। প্রতিবছর একঝাঁক উজ্জ্বল তরুণ-তরুণী এই কঠিন পথ পার করে ওই সম্ভ্রমপূর্ণ উচ্চপদে বসে! সুতরাং, প্রাথমিক কঠিন পরিস্থিতিকে জয় করতে পারলেই সামনে জীবন নিশ্চিত ও সুন্দর। তাই ‘কষ্টকে মনে কর কষ্ট নয়’! 

তোমরা যারা WBCS প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দিতে চলেছো প্রথমে তাদের অভিনন্দন জানানো দরকার যে তোমরা রাজ্যের প্রশাসনিক দায়িত্ব এবং আরও অন্যান্য গুরুভার তুলে নিতে প্রস্তুত হয়েছো। তারপর বলার বিষয় এই যে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি যতই নিখুঁত হোক না কেন পরীক্ষার হলে বসে কখনোই দুটো ভুল করা যাবে না –এক. অতিরিক্ত আত্মপ্রসাদ এবং দুই. উদ্বেগ। এই দুই-ই পরীক্ষায় উত্তর ভুল করার জন্য দায়ী। সাধারণত, WBCS প্রিলিমস পরীক্ষায় একটি পেপার থাকে। প্রশ্নপত্রে 8টি বিভাগ এবং প্রতিটি বিভাগে ২৫ টি করে প্রশ্ন থাকে। মাল্টিপল চয়েসের এই প্রতিটি প্রশ্নের মান ১। ২০০ মার্কের এই প্রিলি পরীক্ষার সময়কাল ২ঘন্টা ৩০ মিনিট। কিন্তু সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য বিষয় হল প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য নেগেটিভ মার্কিং আছে। 

সাফল্য কোন আকস্মিক ঘটনা নয়। পরিশ্রম মনসংযোগ এবং মেধার সমন্বয়ে তাকে লাভ করতে হয়। পরীক্ষার হলে বসে মনসংযোগ করতে হবে প্রশ্নপত্রের প্রতি। এখানে MCQ ধরণের প্রশ্ন থাকে এবং আমরা সবাই জানি এর উত্তর দিতে হয় আলাদা OMR শিটে। প্রত্যেকটি প্রশ্নের জন্য চারটি করে অপশন থাকে। OMR শিটে প্রশ্নের নাম্বার দিয়ে পাশে চারটি অপশন গোল গোল করে দেওয়া থাকে। উত্তর করার সময় সঠিক উত্তরটিকে কালো বলপয়েন্ট পেন দিয়ে ভরাট করতে হয়। সুতরাং যদি এমন হয় কোয়েশ্চেন পেপার হাতে পেয়ে এক ঝলক দেখেই মনে হয়, আরে এ তো খুব সহজ প্রশ্ন এসেছে, বা সব কমন এবং প্রচন্ড আত্মবিশ্বাসে উত্তর করতে আরম্ভ করে দেওয়া হয় তাহলে ভুল হতে পারে। OMR শিটে আছে শুধু নাম্বার আর অপশন, বেখেয়াল হয়ে ভুল নাম্বারের কোয়েশ্চেনে উত্তর করে দিলেই সর্বনাশ! ওই প্রশ্নের উত্তর তো ভুল হলই, সঠিক জানার জন্য ১ নাম্বার পাওয়া গেল না। উপরন্তু ভুল উত্তরের জন্য এক নম্বর কাটা গেল। 

সুতরাং, OMR শিট ভরার সময় সাধু সাবধান! অনেক সময় প্রশ্নের খুব কাছাকাছি উত্তরের অপশনগুলো এমনভাবে দেয় যা খুব ঠান্ডা মাথায় না দেখলে তফাৎ করা যাবে না। আবার একই উত্তরের হয়তো দুটো অপশন দিয়ে দিল, সেক্ষেত্রে প্রথম যেটি ঠিক অপশন সেটিকে চিহ্নিত করতে হবে।  প্রশ্নটি যেমনভাবে পড়ে আমরা অভ্যস্ত ঠিক তার বিপরীত ক্রমেও দিতে পারে। যেমন ধরা যাক আমরা এরকম প্রশ্ন পড়ে থাকি ‘কাজিরাঙা অভয়ারণ্যে এর মধ্যে কোন প্রাণীটি সংরক্ষণ করা হয়?’ কিন্তু প্রশ্ন এরকম হতেই পারে ‘কাজিরাঙা অভয়ারণ্যে এর মধ্যে কোন প্রাণীটি সংরক্ষণ করা হয় না? এই ‘না’-টুকুকে খেয়াল না করলেই ভুল হয়ে যাবে— কমে যাবে প্রাপ্ত নাম্বারের অঙ্ক। 

বোঝাই যাচ্ছে, প্রশ্ন যেমনই আসুক মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে, প্রথমে প্রশ্ন হাতে পেয়ে বেশ কয়েকবার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোকরে দেখে নিতে হবে। MCQ টাইপ পরীক্ষা খুব বেশি সময়সাপেক্ষ নয়। কিন্তু সময় নিতে হবে ভাবতে, বুঝতে এবং সঠিকভাবে OMR শিট ভরতে। WBCS প্রিলি পরীক্ষায় নাম্বার খুব জরুরী, যেন একটা নাম্বারও ভুলবশত কাটা না যায় সেই খেয়াল রাখতে হবে। কেননা বোর্ড যখন কাটঅফ মার্ক ঘোষণা করবে তখনই কম নাম্বারের প্রার্থীরা বাদ পড়ে যাবে। তাই নাম্বারটা যেন উপরের দিকে থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সফলতার পথে বাধা তো আসবেই, সেই বাধা অতিক্রমণেই সাফল্যের আনন্দ। আশা করা যায় ২০২৩-এও প্রচুর ছাত্রছাত্রী WBCS প্রিলি পরীক্ষায় সফল হবে এবং পরবর্তী পর্যায়ে তাদের আমরা দেখতে পাব।